১৬ ডিসেম্বর সুইডেনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদা, উদ্দীপনা ও ভাব-গাম্ভীর্যের সঙ্গে ৫০তম মহান বিজয় দিবস ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। গতকাল সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর সুইডেনের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পরিচালিত সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষের শপথ বাক্য পাঠে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন এবং সন্ধ্যায় কাউন্সেলর মিজ আমরিন জাহান-এর সঞ্চালনায় দূতাবাস মিলনায়তনে আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ পাঠ করা হয় এবং সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা, শহীদ বুদ্ধিজীবী, ত্রিশ লাখ বীর শহীদ, মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রমহারানো দু’লাখ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাষ্ট্রদূত মোঃ নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গনে প্রতীকী জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পর্যায়ক্রমে পাঠ করা হয়। রাষ্ট্রদূত মোঃ নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে সুইডেন প্রবাসি বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ সহ আগত অতিথিগণ বক্তব্য রাখেন।
রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ নাজমুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে বিচক্ষণ দিক-নির্দেশনা ও অতুলনীয় নেতৃত্বের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লাখ বীর শহীদ, মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রমহারানো দু’লাখ মা-বোনের আত্নত্যাগ এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা উল্লেখ করে তাঁদের অতুলনীয় অবদানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অসামান্য অর্জনের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে বর্তমান সরকারের গৃহীত রুপকল্পসমূহ বাস্তবায়নে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে তাদের সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানো ও তাদের মনে দেশের প্রতি অনুরাগ ও কর্তব্যবোধ তৈরির জন্য রাষ্ট্রদূত আহবান জানান। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশী শিশু সহ অন্যান্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।