পোস্ট করার শতবছর পর গন্তব্যে পৌঁছাল চিঠি
অবশেষে চিঠি গন্তব্য খুঁজে পেয়েছে। তবে যথাসময়ে নয়, পোস্ট করার শতবছরেরও বেশি সময় পর। এমনিই বিচিত্র ঘটনা ঘটেছে ইংল্যান্ডে। খবর মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজের।
পোস্ট করার শতবছর পর গন্তব্যে পৌঁছাল চিঠি
চিঠিটি পাঠানো হয়েছিল ১৯১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের উত্তুঙ্গ সময়ে। চিঠিটির গন্তব্য ছিল সাউথ লন্ডনের হ্যামলেট রোডের একটি বাড়ি। সেই বাড়ির বাসিন্দারা অনেক আগেই বদলে গেছেন। নতুন প্রজন্মের মালিকই চিঠিটি গ্রহণ করেন।
প্রাথমিকভাবে বাড়িটির নতুন বাসিন্দা ফিনলে গ্লেন ভেবেছিলেন, চিঠিটি ২০১৬ সালে পোস্ট করা। তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করি যে এতে বছরের জায়গায় লেখা ছিল ’১৬। তাই আমরা ভেবেছিলাম সালটি বোধহয় ২০১৬। কিন্তু আমরা যখন স্ট্যাম্প কার্ডে রাণির পরিবর্তে রাজাকে দেখি তখনই আমাদের মনে হয় যে, এটি ২০১৬ সালের হতেই পারে না।’
গ্লেন জানান, চিঠিটি তাদের কাছে আসে আরও কয়েক বছর আগে। কিন্তু তখন সেটিকে নিয়ে তারা ততটা আগ্রহ প্রকাশ করেননি। তবে সম্প্রতি তারা চিঠিটিকে স্থানী ইতিহাস সমিতিতে নিয়ে যান যেন সেখানকার গবেষকেরা চিঠিটিকে নিয়ে গবেষণা করতে পারেন।
চিঠিতে ইংল্যান্ডের তৎকালীন রাজা পঞ্চম জর্জের মস্তকাঙ্কিত ১ পয়সার একটি স্ট্যাম্প দেয়া আছে। তখনও প্রয়াত রাণি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্ম হয়নি। এই চিঠি পাঠানোর প্রায় এক যুগ পর রাণির জন্ম হয়। চিঠিটি অতি পুরনো হওয়ায় গ্লেন চিঠিটি খুলে দেখেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন দেখি যে, চিঠিটি অতি পুরনো তখন আমরা এটিকে খুলে দেখার সিদ্ধান্ত নিই।’
তবে ব্রিটেনের পোস্টাল সার্ভিস অ্যাক্ট-২০০০ অনুসারে অন্য কারো নামে লিখিত চিঠি খুলে দেখা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই বিষয়ে গ্লেন বলেন, ‘চিঠি খুলে যদি আমরা কোনো অন্যায় করে থাকি তবে আমরা কেবল তার জন্য ক্ষমাই চাইতে পারি।’
স্থানীয় পাক্ষিক নরউড রিভিউয়ের সম্পাদক ও ইতিহাসবিদ স্টিফেন অক্সফোর্ড বলেন, ‘একজন স্থানীয় ইতিহাসবিদ হিসেবে আমি বিস্মিত এবং আনন্দিত যে, এমন একটি চিঠি আমাদের কাছে পৌঁছেছে।’
অক্সফোর্ডের মতে, চিঠিটি এক বান্ধবী আরেক বান্ধবীকে লিখেছিল। চিঠিটি লিখেছিল ক্রিস্টাবেল মেনেল। যার বাবা ছিল চা ব্যবসায়ী হেনরি টুক মেনেল। লিখেছিলেন ওসওয়াল্ড মার্শ নামের একজনের স্ত্রী কেটির কাছে। কেটির উদ্দেশ্যে মেনেল লিখেছিলেন, ‘প্রিয় কেটি, আমি এখানে ভয়াবহ ঠাণ্ডার মধ্যে কঠিন জীবনযাপন করছি।’
স্টিফেন অক্সফোর্ড আরও জানান, ১৮০০ সালের শেষ দশকগুলো থেকেই সাউথ লন্ডনের এই এলাকাটি অন্যতম একটি ব্যবসায় কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। সে সময়ে এখানে প্রচুর মধ্যবিত্ত পরিবার বসবাস করত।
এদিকে, চিঠি এত দেরি করে পৌঁছানোয় দুঃখ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ রয়্যাল মেইল। গত বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিক এক বিবৃতিতে রয়্যাল মেইল বলেছে, ‘এই ধরনের ঘটনা খুব কমই ঘটে এবং এই চিঠির ক্ষেত্রে আসলে কী ঘটেছে তা আমরা নিশ্চিত নই।’