পাঠক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদের উপন্যাস মোহমায়া
এবার অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ এ প্রকাশিত সমকালীন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক “জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদ” এর “মোহমায়া” উপন্যাসটি সোশ্যাল মিডিয়ার সমসাময়িক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে । এটি তাঁর লিখিত তৃতীয় উপন্যাস । এর আগেকার লিখিত লেখিকার “দিগন্তের আলোয়” এবং “রিক্ততার স্বীকারোক্তি ” উপন্যাস দুটি পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল ।
এক নজরে “মোহমায়া”:
বইয়ের নাম : মোহমায়া
কেন্দ্রীয় চরিত্র : আসিফ ও মায়া
খল চরিত্র : নিশাত
অন্যান্য চরিত্র : নীরা, শফিক সাহেব, জলিল উদ্দিন, সাব্বির আহমেদ, আরও অনেকে।
লেখিকা : জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদ
ধরণ : সমসাময়িক উপন্যাস
প্রথম প্রকাশ : অমর একুশে বইমেলা ২০২৩
প্রকাশক : আহসান আল আজাদ
প্রকাশনায় : বাংলার প্রকাশন
বইমেলায় স্টল নং : ২১২, ২১৩
অনলাইন পরিবেশক :
রকমারী থেকে অর্ডার লিংকঃ
https://www.rokomari.com/book/277150/mohomaya,
বইফেরী থেকে অর্ডার লিংক:
https://boiferry.com/book/mohomaya
ফোনে অর্ডার করতে :
১৬২৯৭ / ০১৫১৯৫২১৯৭১
স্বত্ব : জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদ
প্রচ্ছদ : মো. মাসরু আহমেদ
অক্ষর বিন্যাস : বুকস এইড
মুদ্রণ : বুকস এইড
মুদ্রিত দাম : ২৪০ টাকা
ইতমধ্যে “মোহমায়া” উপন্যাসটির বেশ কিছু রিভিউ পাঠক মহল থেকে প্রকাশিত হয়েছে । নিম্নে প্রকাশিত কিছু রিভিউ তুলে ধরা হলো ।
সম্মোহনী আজিবুর
বইটির ফ্লাপ:
প্রিয় মানুষের কাছে সবসময় প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে। চোখ বুজে তাদের উপর ভরসা করা যায়। কিন্তু সেই প্রিয় মানুষ যদি কখনো প্রতারণা করে তবে তার কষ্ট হয় সমুদ্র সমান। সমুদ্রের ঢেউয়ের আছারে ধীরে ধীরে পাড়গুলো ভাঙতে শুরু করে। ভেঙে যাওয়া পাড়গুলো আর কখনো মসৃণ হয় না। ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক এই ভাঙা পাড়ের মতো। একবার ভেঙে গেলে তা আর আগের মতো কখনোই হয় না।
নীরা নামটি দেখে যে গানটির কথা মনে পড়ে গেল যা আসিফের আত্মকথনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ :
“কিছু ভুল কিছু অভিমান,
দূরে নিয়ে গেল তোমায়,
নিরুপায় এই মন সে সময় ছিলো অসহায়।
এভাবেই ভালোবাসা একদিন,
ঘৃণাতেই পরিণত হয়,
সময়ের নিয়মে এ সময়
তবু বয়ে যায়।
নীরা ক্ষমা করো আমাকে
এতটুকু সুখ তোমায়
পারিনি দিতে।
দুঃখ কত জমিয়ে রেখেছো,
অভিমান আভরণে ঢেকেছো,
পারবোনা সেই অভিমান ভাঙ্গাতে,
নতুন আশার কথা শোনাতে,
নীরা ক্ষমা কর আমাকে
এতটুকু সুখ তোমায়
পারিনি দিতে।
দুটি হৃদয়ের যত কথা,
রূপ কথা হয়ে ভেসে গেছে,
অন্তহীন বিরহের সব দিন
এই হৃদয়ে বাসা বেঁধেছে।
নীরা ক্ষমা কর আমাকে
এতটুকু সুখ তোমায়
পারিনি দিতে।
পছন্দের কিছু উদ্ধৃত :
১. মোহমায়া বর্তমান সময়ের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর, রোমান্টিক, আবেগময়, লাভ ট্রায়াঙ্গলের কাহিনি, যেখানে রয়েছে মিথ্যাচার, লোভ-লালসা, ঘৃণা, ভণ্ডামি আর প্রতারণার এক জীবন্ত চিত্র। যেখানে কিছু মানুষ প্রিয় মানুষের কাছ থেকে নানাভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছে। যতদিনে বুঝতে পারে, ততদিনে জীবনের প্রতি, ভালোবাসার প্রতি একটা ঘৃণাবোধ কাজ করে। থেকে যায় শুধু এক মোহমায়া।
২.যত ঝগড়া হোক, দূরত্ব আসুক কিংবা হোক মনোমালিন্য, বাঙালি মেয়েদের স্বামীর প্রতি কেমন যেন একটা টান সবসময় কাজ করে। কিন্তু ছেলেমানুষগুলো জানি কেমন। মেয়েদের আবেগগুলো বুঝে না।
৩.একটা বয়সে আসলে তুমিও বুঝতে পারবে তোমার এখনকার কথাগুলো ছিলো কেবল আবেগের কথা। বাস্তবতা অনেক আলাদা, অনেক কঠিন।
৪. বাচ্চাদের মধ্যে মন ভালো করে দেবার মতো অদ্ভুত একটা ক্ষমতা থাকে। বাবা-মা যত ক্লান্ত থাকুক না কেন বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে সব ক্লান্তি ভুলে যায়। বাচ্চাদের মুখের হাসি দেখলে সব কষ্ট ভুলে যায়।
৫. জীবনের অনেক রং। নানানভাবে, নানান সময় এ রঙের বদল হয়। কখনো ইচ্ছাকৃত, কখনো অনিচ্ছাকৃত। কখনো এ বদল আনন্দ দেয়, কখনো কাঁদায়। কখনো এ বদল হয় ভালোর জন্য,কখনো হয় কষ্টের।
৬. কিছু কিছু ছেলেরা কখনো কোনো মেয়ের ইমোশন বোঝে না, ভালোবাসা বোঝে না। তারা শুধু ভালোবাসার অভিনয় করতে জানে। নিঁখুত অভিনয়। যে অভিনয় ধরার ক্ষমতা কোনো মেয়ের নেই।
মেয়েরা সাধারণত অভিনয় জানা ছেলেগুলোর প্রেমে পড়ে। তাদের মিথ্যা অভিনয়ের মায়াজালে একটা মেয়ে যে কখন নিজেকে জড়িয়ে ফেলে তা সে নিজেও জানে না।
পাঠ প্রতিক্রিয়া :
পাঠকের জন্য “মোহমায়া” উপন্যাসটি সত্যিকার অর্থেই শিক্ষণীয় উপকরণে ঠাসা । একজন পাঠক হিসেবে সেটাই আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্যে নাটকীয়তার রস আছে। একজন পাঠক প্রথম থেকে শেষ অব্ধি পড়ে সেই রস আস্বাদন করতে পারবেন । লেখিকা গল্পের চলমান প্রক্রিয়ায় বলার ঢংয়ে সত্যিকার অর্থেই তাঁর মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। তাই পাঠককে “মোহমায়া” উপন্যাসটি সংগ্রহ করে পড়ার উদাত্ত আহ্বান রইলো ।
আমি প্রিয় লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদ আপুর উত্তরোত্তর সাফল্যের জন্য আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি এবং ইহকাল ও পরকালের শান্তি কামনা করছি।
সাধনা সাহা
হাজারো মানুষের অতলান্ত মনের গহীনে জমে থাকা সুখ বা আনন্দের ঝর্ণাধারা অথবা দুঃখ বেদনার নীল স্রোতধারা কতটুকুই বা আমরা জানি..? কতটুকুই বা আমরা তাদেরকে দেখে অনুধাবন করতে পারি..? আসলে বড় অদ্ভুত এই মানব চরিত্র! সে চরিত্র বাস্তবই হোক বা কল্পনায় সৃষ্ট কোন কাহিনির চরিত্র। কিসে তার সুখ…? কিসে তার দুঃখ…? এই বাস্তবিক চিন্তা চেতনাও কখনো হারিয়ে যায় মোহ আর মায়ার
অবিচ্ছেদ্য জালে! তেমনি একটা বিশেষ চরিত্র মায়া। যার হৃদয়ের অন্তর্নিহিত দীর্ঘশ্বাসের অন্তরালে মিল খুঁজে পাই রবীন্দ্রনাথের গানের কয়েকটি চরণে,
“আপন মনো জ্বালা নীরবে সহি
তবু পারিনা দূরে যেতে, মরিতে আসি
লইগো বুক পেতে অনল বান।
আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান।”
হ্যা বন্ধুরা, এই মায়া চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন লেখক জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদ তার “মোহমায়া” উপন্যাসে।
প্রচ্ছদ ও নামকরণঃ- বইটির প্রচ্ছদ তৈরি করেছেন মো. মাসরু আহমেদ। তিনি তার মেধা আর মননের অপূর্ব সমন্বয়ে কাহিনির পরিপ্রেক্ষিতে সুন্দর ও সার্বিকভাবে বইটির প্রচ্ছদ অলংকরণে সার্থক হয়েছেন বলেই আমার ধারনা। বইটির কাহিনী বিন্যাস, চরিত্র চিত্রায়ণ, গল্পের পটভূমি, এবং সাবলীল শব্দচয়ন ও প্রকাশভঙ্গির দিক দিয়ে নামকরণও সার্থক হয়েছে বলাই যায়। বইটির উৎসর্গকরণ টাও “পৃথিবীর প্রতিটি মেয়েকে” বেশ অসাধারণ লেগেছে।
কাহিনীবিন্যাসঃ- “মেহমায়া” লেখক জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদের ত্রিভুজ প্রেমের অনবদ্য এক কাহিনী। এই প্রেমে যতটা না ভালোবাসা আছে তার থেকে বেশি জড়িয়ে আছে আবেগ আর মোহ নামক অদৃশ্য জাল। ভুমিকার সূত্র ধরে লেখকের ভাষায় বলা যেতেই পারে,
“মোহমায়া বর্তমান সময়ের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর, রোমান্টিক, আবেগময় লাভ ট্রায়াঙ্গেলর কাহিনী, যেখানে রয়েছে মিথ্যাচার, লোভ-লালসা ,ঘৃণা,ভন্ডামি আর প্রতারণার এক জীবন্ত চিত্র”।
হ্যা পাঠক বন্ধুরা, উপন্যাসের নায়ক আসিফ তেমনি এক চরিত্র, যার মধ্যে রয়েছে হঠকারিতা, লোভ, মিথ্যাচার আর প্রতারণা। তিনি একাধিক প্রেমে বিশ্বাসী। ফেসবুকের কল্যাণে বেছে বেছে দেশের বাইরে মানে বিদেশে থাকা সুন্দরী, স্মার্ট বিবাহিতা অথবা ডিভোর্সী মেয়েদের সংগেই চলতো আসিফের প্রেম। সেই মধুর প্রেমের জালে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যায় অনেক মেয়েই। মায়া, নিশাত বা নীরা কেউ -ই তার ব্যতিক্রম নয়…!
কখনো রূপের মোহ, কখনো টাকার অথবা কখনো সাংসারিক জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দের আশায় আসিফ চালিয়ে গিয়েছে তার প্রেমের উপাখ্যান। অটুট রাখতে চেয়েছে সব কয়টি সম্পর্ক। নীরা ছিল আসিফের পূর্ব পরিচিত এবং ফেসবুক বন্ধু। ওর সংগে ব্রেকআপ হওয়ার পর সুইজারল্যান্ড প্রবাসী মায়ার সংগে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। মায়া তার স্বামী, সংসার সন্তানের কথা চিন্তা করে আসিফের সংগে বন্ধুত্বের সম্পর্কে আজীবন থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু আসিফ! আসিফ এতটুকুতে মোটেই সন্তুষ্ট ছিল না। অন্যদিকে, ভালোবাসার মোহজাল বিছিয়ে আসিফ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আশায় যদিও বিয়ে করেছিল নিশাতকে। কিন্তু, পরিনতিতে কি পেয়েছিল সে….?
প্রিয় পাঠক, আপনারাই বলেন এতগুলো সম্পর্ক একসংগে চালিয়ে যাওয়া কি সম্ভব…? না, সম্ভব নয়…! গুণীজনেরা বলেন, “প্রেম আর ধোঁয়া কখনো লুকিয়ে রাখা যায় না”। আসিফও পারেনি। তার প্রেমের কাহিনিগুলো জানাজানি হয়ে যায়। উন্মুক্ত হয় প্রলোভন, লোভ, প্রতারণা আর অবিশ্বাসের পর্দা। তাই তো লেখকের লেখনিতেও প্রকট হয়ে ওঠে,
“যেখানে কিছু মানুষ প্রিয় মানুষের থেকে নানাভাবে প্রতারণার স্বীকার হয়েছে। যতদিনে বুঝতে পারে, ততদিনে জীবনের প্রতি, ভালোবাসার প্রতি একটা ঘৃণাবোধ কাজ করে। থেকে যায় শুধু মোহমায়া”।
প্রিয় পাঠক, কি হয়েছিল আসিফের শেষ পরিনতি..? মায়া কি পেরেছিল আসিফের মোহের মায়া কটিয়ে উঠতে…? নীরা কি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিল…? পেরেছিল কি পরবর্তীতে নিজের জীবনকে গুছিয়ে নিতে….? আর নিশাত…! আসিফের সংগে ওর বৈবাহিক জীবন কেমন চলছিল…? এতগুলো প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই বইটা পড়তে হবে।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ- “মোহমায়া” উপন্যাসটি ডিজিটাল বিশ্বায়নের যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার চলমান পরিস্থিতির আবহে আবর্তিত হয়েছে। লেখক সুনিপুণ ভাবে অনলাইন মিডিয়ার সমসাময়িক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার সুন্দর উপস্থাপনের মাধ্যমে কাহিনী এবং তার চরিত্রগুলো সৃষ্টি করেছেন। আমি মুগ্ধ হই আর ভাবি, সমসাময়িক ঘটনাগুলো এত সুন্দর, এত জীবন্ত করে, কত অসাধারণ দক্ষতায় উপস্থাপন করেছেন তিনি। নিশ্চয়ই তিনি একজন বড়ো মাপের লেখক।
অনলাইন যেমন আমাদেরকে দেখিয়েছে অনেক আলোর মুখ, কঠিনকে করেছে সহজলভ্য, উন্মুক্ত করেছে অনেক জটিল বিষয়, তেমনি আবার একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন পথেরও হদিস দিয়েছে, সৃষ্টি করেছে একটি ধোঁয়াশার। এই ধোঁয়াশার কারণে অনেকের জীবনে নেমে এসেছে সংসার ভাঙার প্রবনতা, বেজে ওঠেছে বিচ্ছেদের করুণ রাগিণী! সাময়িক শান্তির জন্য কিছু কিছু মানুষ পরকীয়ার মত জঘন্য কাজে জড়িয়ে পরছে। বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে উঠছে মানুষের লোভ, লালসা, আর প্রতারণা! এই সব লোভ-লালসা, প্রতারণা, মিথ্যাচার থেকে এই সমাজকে, সমাজের মানুষকে সুকৌশলে এড়িয়ে আসার সুন্দর একটি বার্তা দিয়েছেন দক্ষ হাতে লেখক তার মোহমায়া উপন্যাসের মাধ্যমে।
তার উপন্যাসের আরো একটা দিক আমার খুব ভালো লেগেছে। আর তা হলো মায়া বা নীরা নিজেদের জীবনের ভুল বুঝতে পেরে ভেঙে পরেনি বরং সত্যটা উপলব্ধি করে নিজেদেরকে নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে! এমন কি প্রতারক আসিফও কোন এক সময়ে ফিরে আসতে চেয়েছে কঠিন বাস্তবের দোরগোড়ায়। মনের দহনে সেও হয়েছে দগ্ধ! ভালোবাসার লুকোচুরি খেলতে যেয়ে সেও খুঁজে পেয়েছিল এক অমুল্য ভালোবাসা যা ওকে দিয়েছিল মায়া। তাইতো ও একান্ত ভাবে চেয়েছিল,
“কোনো একটা অলীক শক্তি এসে সবার ভুল বোঝাবুঝি ভাঙিয়ে যাক। ওরাও বুঝুক সম্পর্কের মাঝে ওদের কী ভুল ছিল।”
প্রিয় পাঠক, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সুন্দর এবং অবলীলায় লেখক তুলে ধরেছেন তার লেখনীর মাধ্যমে। আশা করি তার গল্পের চরিত্র চিত্রায়ণের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তিনি তার সৃষ্ট চরিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন ভুল থেকে ফিরে এসে কীভাবে ভালো থাকা যায়..! নিজেদেরকে শুধরে নিয়ে, নতুন করে নতুন পথে
বেঁচে থাকার সোনালি আলোয় আলোকিত হওয়া যায়।
আসুন না পাঠক, আমরাও আমাদের জীবনের কিছুটা সময় ভালো থাকার জন্য, হাতে তুলে নেই “মোহমায়া” উপন্যাসটি। ছড়িয়ে দেই লেখকের এই সত্য সুন্দর বার্তাটি। আর মনে মনে কামনা করি আমাদের দেশের, আমাদের সমাজের এমন হাজারো নীরা বা মায়ারা যেন নিজেদের জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে অবলীলায় আর দৃঢ়কণ্ঠে কবিগুরুর মতো বলতে পারে,
“সহজ সুখের সুধা তাহার মূল্য তো নাই,
ছড়াছড়ি যায় সে-যে ওই যেখানে চাই-……..
বারে বারে চাইব না আর মিথ্যা টানে
ভাঙন-ধরা আঁধার-করা পিছন-পানে।”
জান্নাতুন নাহার চাঁদনী
“মোহমায়া” বইটি আমি গত কয়েকদিন আগেই হাতে পেয়েছি। আর হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই পড়তে শুরু করেছি।
কেন যেন গত কিছুদিন এই বইটির পাবলিসিটি দেখতে দেখতে আমিও এই মোহমায়ার মোহে পড়ে গিয়েছিলাম।
আর তাই হাতে পাওয়ার পর তর সইছিল না কখন পড়ে শেষ করবো এটা ভেবে। আমি আসলে সারাদিন নানা ব্যস্ততায় বই পড়ার জন্য তেমন সময় বের করতে পারি না। তারপরও এই বইটি আমি মাত্র দুইদিনে পড়ে শেষ করেছি। কারণ পড়া শেষ না করে উঠতেই পারছিলাম না। পড়ার নেশা হচ্ছে সবচেয়ে বড়ো নেশা।
👉 বইটির ফ্ল্যাপ থেকেঃ কিছু কিছু ছেলেরা কখনো কোনো মেয়ের ইমোশন বুঝে না, ভালোবাসা বুঝে না। তারা শুধু ভালোবাসার অভিনয় করতে জানে। নিখুঁত অভিনয়, যে অভিনয় ধরার ক্ষমতা কোনো মেয়ের নেই।
মেয়েরা সাধারণত অভিনয় জানা ছেলেগুলোর প্রেমে পড়ে। তাদের মিথ্যা অভিনয়ের মায়াজালে একটা মেয়ে যে কখন নিজেকে জড়িয়ে ফেলে তা সে নিজেও জানে না।
👉 উৎসর্গপত্রঃ “পৃথিবীর প্রতিটি মেয়েকে”
প্রতিটি মেয়ের মন ভালো রাখাটা অনেক জরুরি। নিজের ইচ্ছা বা পছন্দ মতো চলা, নিজের মনের কথা শোনা খুব জরুরি। কারণ একটা পরিবারের মূল খুঁটি কোনো না কোনো একজন নারী।
আর সে নিজে ভালো না থাকলে, সে কখনো তার পরিবারকে ভালো রাখতে পারবে না।
👉 ভুমিকা থেকে কিছু অংশঃ মোহমায়া বর্তমান সময়ের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর, রোমান্টিক, আবেগময়, লাভ ট্রায়েঙ্গেলের কাহিনী, যেখানে রয়েছে মিথ্যাচার, লোভ লালসা, ঘৃণা, ভণ্ডামি আর প্রতারণার এক জীবন্ত চিত্র। যেখানে কিছু মানুষ প্রিয় মানুষের থেকে নানাভাবে প্রতারণার স্বীকার হয়েছে। যতদিনে বুঝতে পারে ততদিনে জীবনের প্রতি ভালোবাসার প্রতি একটা ঘৃণাবোধ কাজ করে। থেকে যায় শুধু এক মোহমায়া।
👉 বইটি থেকে আমার পছন্দের কিছু অংশঃ
১. বৃষ্টি হবার আগ মুহূর্তে এমন সময়টা আসিফের খুব ভালো লাগে। মনে কেমন যেন একটা উত্তেজনা কাজ করে। আর বৃষ্টি যেন এসেছে উত্তেজনাকে শান্ত করে দিতে। মনে মধ্যে একটা শীতলতা এসে পড়ে। আসিফ জানালার একটা সাইড খুলে দিলো। রুমে হুহু করে বাতাস আসছে। বৃষ্টি শুরু হয়েছে, খোলা জানালা দিয়ে বৃষ্টির ফোঁটা আসিফের মুখে ছিটা আসলো।
২. ছোট ছোট কিছু প্রাপ্তি মাঝে মাঝে জীবনে অনেক বড়ো সুখ এনে দেয়। আজ মায়ার জীবনে সুখের একটা দিন। স্কুল, কলেজে ভালো রেজাল্ট তারপর ভালো জব, ভালো ফ্যামিলিতে বিয়ে হবার পরও ছোট ছোট নিজস্ব কিছু সৃজনশীল কাজ থেকে প্রাপ্তি মানসিক তৃপ্তি এনে দেয়।
৩. আসিফ খুব করে চায় কোনো এক অলীক শক্তি এসে সবার ভুল বুঝাবুঝি ভাঙিয়ে যাক। ওরাও বুঝুক সম্পর্কের মাঝে ওদের কী ভুল ছিল। আসিফ জানে না ওর এ চাওয়া পূরণ হবে কী না।
👉 বইটি পড়ে আমার অনুভূতিঃ আসলে আপু এই বইটি আমাদের ডিজিটাল যুগের বর্তমানের বাস্তব প্রেক্ষাপট নিয়ে লিখেছেন। অনলাইন দুনিয়ায় বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ এক সম্পর্কে সন্তুষ্ট নয়। অনেকেই নিজের স্বামী, সন্তান, সংসার সবকিছু থাকা স্বত্বেও সাময়িক মানসিক শান্তি খুঁজতে পরকীয়ার মতো জঘন্য কাজে জড়িয়ে যায়।
আবার অনেক ছেলে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতে একসাথে নান ধরনের মেয়েদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে ফেসবুক, মেসেঞ্জারে। মেয়েদের থেকে হাতিয়ে নেয় টাকা, পয়সা ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে। তারপর যখন একে অপরের প্রতারণা ধরতে পারে তখন কষ্ট পায় আর আত্মহত্যার মতো পাপে জড়াতেও এরা পিচপা হয় না।
সত্যি অদ্ভুত মানব চরিত্র। মাঝে মাঝে কিছু মানুষ বুঝতেই পারে না আসলে কীসে তার সুখ আর কীসে তার আনন্দ। আর আনন্দ খুঁজতে যেয়েই নানা অপরাধমূলক কাজ তারা করে থাকে। কেউ নিজের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসে সঠিক পথে আবার কেউ ভুলেই রয়ে যায়। আর সারাজীবন সাফার করে।
আমি আমার নিজের মতো করে বর্ননা করলাম বইটি পড়ে আমার অনুভূতিটুকু। বইটি পড়ার আমন্ত্রণ রইলো সবাইকে। অনেকগুলো চরিত্রের বিভিন্ন অনুভূতির খোঁজ পাবেন বইটিতে। ভুল থেকে কীভাবে সঠিক পথে ফিরে এসে ভালো থাকা যায় তার বার্তা গল্পে গল্পে দারুণ ভাবে দিয়েছেন লেখিকা।
বইটি পেয়ে যাবেন এবারের বইমেলায় বাংলার প্রকাশন (২১২-২১৩) নং স্টলে। এছাড়াও রকমারিতে অর্ডার করতে পারবেন বিশাল ছাড়ে। সবাই বেশি বেশি বই পড়ুন আর প্রিয়জনকে বই উপহার দিন। বই হলো দিনশেষে আমাদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
মো রিদোয়ান আহমদ আকিব
বইয়ের সার সংক্ষেপ:
কাহিনীর শুরু হয় আসিফ নামের একজনকে কেন্দ্র করে, যে অফিসের চেয়ারে হেলান দিয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছে। তারপর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসিফের পরিচয় হয় মায়া নামের একজনের সাথে।
মায়া স্বামীর সাথে সুইজারল্যান্ডই বসবাস করে এবং মায়ার এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু এতে আসিফের কিছুই যায় আসে না। সে অপেক্ষায় থাকে মায়ার সাথে কথা বলার।
একসময় তাদের কথা হয়। আসিফ দেখতে অনেক সুদর্শন এবং সেই সাথে সুন্দর কথার মাধ্যমে মায়াকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। আসিফ এবং মায়ার বয়সের অনেক পার্থক্য থাকলেও একসময় তাদের মধ্যে শুরু হয় বন্ধুত্ব। একজনের শখের সাথে যদি অন্যজনের শখ মিলে যায় তাহলে বলা যায় দুজনের মনের মিল রয়েছে। মায়া এবং আসিফের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। দুজন-ই ফটোগ্রাফি পছন্দ করতো। তার-ই বদৌলতে দুজনের মধ্যে খুব-ই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এভাবেই চলছিল সম্পর্ক। মায়ার সাথে মায়ার স্বামীর তেমন বনিবনা ছিল না। আর আসিফের সাথে পরিচয় হবার পরে যেন মায়ার স্বামীর সাথে মায়ার দূরত্ব আরো বাড়তে লাগলো।
কিন্তু এক পর্যায়ে মায়ার পরিচয় হয় নিশাত এবং নীরা নামে আরো দুজন মেয়েলোকের সঙ্গে। আর তাতেই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। শুরু হয় নতুন চমক!
আর এদিকে আসিফ দেখে যে তার জায়গা থেকে সে সঠিক। ঠিক যেমনটা ইংরেজিতে সিক্স লেখলে ওপর পাশের জন দেখে এটা নাইন। আসলে দুজনের অবস্থান থেকে যে দুজনই সঠিক সেটা কেউ বুঝতে চায় না। আসিফের ক্ষেত্রেও কি ঠিক একই বিষয় ঘটেছে? না কি আসিফ তার নিজের ভুল বুঝতে লারছে না? হয়তো বইটি পড়লে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।
বইয়ের নামকরণ:
মায়া এবং আসিফের সম্পর্কের প্রধান কারণ হলো মোহমায়া। মায়া যেন আসিফের মোহমায়ায় কিংবা আসিফ যেন মায়ার মোহমায়ায় পড়েই এই সম্পর্ককে জড়িয়ে পড়েছে। সে হিসেবে বইয়ের নাম ‘মোহমায়া’ রাখা আমি যৌক্তিক বলেই মনে করি।
বইটি কেন পড়া উচিত:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সম্পর্ক আর বাস্তব জীবনের সম্পর্কের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে। এখানে চাইলেই কাউকে ধোঁকা দেওয়া যায়। বইটি পড়লে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে।
বইয়ে পছন্দের কয়েকটি উক্তি:
বইয়ের বেশ কয়েকটি উক্তি আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি উক্তি নিচে তুলে ধরলাম।
১. পছন্দের বিষয়কেই পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া বেশি ভালো, এতে করে কাজ করার আগ্রহ বাড়ে। (পৃষ্ঠা-১২)
২. যাকে মানুষ পছন্দ করে তাকে কল্পনা করতে পারে। (পৃষ্ঠা-১৭)
৩. আমরা মায়েদের কাছে কত কিছু খাবার বায়না করি কিন্তু মায়েরা কখনো মুখ ফুটে কিছু খেতে চায় না। (পৃষ্ঠা-৩১)
৪. কাছে থাকা মানুষগুলো দূরে গেলে আমরা তার গুরুত্ব বুঝতে পারি। এই গুরুত্বটা সবসময় বুঝা গেলে কাছের মানুষগুলো আরো অনেক বেশি যত্নে থাকতো। (পৃষ্ঠা-৪৪)
৫. মন খারাপ ব্যাপারটা অদ্ভুত। একটু মন খারাপ হলে আস্তে আস্তে মন খারাপের মাত্রাটা বাড়তেই থাকে। (পৃষ্ঠা-৪৭)
৬. বাহিরে থেকে কখনো কোনো ঝড়-ঝাপটা এলে পরিবারের ভিতটা তখন আরো অনেক বেশি মজবুত হয়ে যায়। (পৃষ্ঠা -৭০)
৭. কোনো বিশ্বাসের সম্পর্কে একবার চিরধরা শুরু হলে সে সম্পর্ক আর কখনোই আগের মতো জোড়া লাগে না। (পৃষ্ঠা-৭১)
৮. ছোট ছোট কিছু প্রাপ্তি মাঝে মাঝে জীবনে অনেক বড় সুখ এনে দেয়। (পৃষ্ঠা-৭৫)
৯. ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া পাড়ের মতো। একবার ভেঙে গেলে তা আর আগের মতো কখনোই হয় না। (পৃষ্ঠা-৭৯)
১০. মেয়েরা সাধারণত অভিনয় জানা ছেলেগুলোর প্রেমে পড়ে। (পৃষ্ঠা-৮০)
বই নিয়ে সমালোচনা:
একজন পাঠককে অবশ্যই একজন সমালোচক হওয়া উচিত। কোনো বিষয়ের সমালোচনা করা মানে এই না যে আমি এর থেকে বেশি জানি। সমালোচনা মানে হলো এই, ভুলবশত যে ভুলগুলো হয়েছে তা যেন পরবর্তী সময়ে আর না হয়। মানুষ মাত্রই ভুল।
‘মোহমায়া’ উপন্যাসটি আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে লেখিকা ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন বলে তাঁর লেখায় অনেক ইংরেজি শব্দ দেখা যায়। যদি ইংরেজি পরিহার করা যেত তাহলে হয়তো আমাদের মতো পাঠকদের পড়তে আরো তৃপ্তি হতো। তবে হ্যাঁ, কোনো ব্যক্তির উক্তির ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। উক্তির ক্ষেত্রে যেকোনো ভাষা ব্যবহার করা যাবে।
‘মোহমায়া’ বইয়ে কয়েকটি বানানের অসংগতি আমার চোখে পড়েছে। হয়তো ভুলবশত-ই এরকম হয়েছে৷ তারপরেও আমি কয়েকটি বানান নিচে তুলে ধরলাম-
একাউন্ট- অ্যাকাউন্ট। (পৃষ্ঠা-১০)
টেক্সট এর- টেক্সটের (পৃষ্ঠা-১৫)
পরেছি- পড়েছি। (পৃষ্ঠা-১৬)
একি-একই। (পৃষ্ঠা-১৯)
ব্যাথা- ব্যথা। (পৃষ্ঠা-৬৮)
পাত্তে- পারো। (পৃষ্ঠা-৮৩)
কাজী নাজরিন
“মোহমায়া” বইটা সংগ্রহ করে পড়বো পড়বো করে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করে আছি কিন্তু বইটা অনলাইনে রকমারিতে অর্ডার করে পেলাম না।রকমারি জানালো মোহমায়া বইটা আপাতত শেষ, আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে, তারপর পাবেন। আমি আর অপেক্ষা করতে পারলাম না। অপরদিকে বইটা পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা বই মেলায় বাংলার প্রকাশন স্টলে। আমি তখন ঢাকায় অবস্থানরত আরেক লেখিকার মাধ্যমে ঢাকা থেকে বইটা সংগ্রহ করি।অনেক ব্যস্ত ছিলাম তাও বইটা পড়া শুরু করলাম।একটানা বসে বইটা পড়ে শেষ করলাম।
পাঠক ও অন্যান্য লেখকদের মতে, জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদ একজন সাদা মনের মানুষ। আকাশচুম্বী সফলতার পরেও যার মধ্যে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই।
সদাহাস্যজ্বল এই মানুষটি অনেক তরুন-তরুনীর লেখক হবার স্বপ্ন পূরণ করে যাচ্ছেন কোন বিনিময়ের আশা ছাড়াই। সে সাথে তাদের উৎসাহ দিতে মেলে দিয়েছে পুরষ্কারের বিশাল ডালা। সে কারনে আপুর ভক্তের অভাব নেই। উনি একজন হেটার বিহীন মানুষ।দূরদেশে থেকেও তিনি সবসময় বিচরণ করেন এদেশের সাহিত্য অঙ্গনে।
জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদকে আমরা কুঁড়ি (জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন) থেকে আলোকিত নারী সম্মাননা-২০২২ প্রদান করা হয়েছে ।
জান্নাতুল ফেরদৌসী মেহমুদ
বর্তমান সময়ের একজন উদীয়মান লেখক। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের অত্যন্ত প্রাচীন, সাগর ঘেরা প্রাচুর্যের স্বর্ণদ্বীপ ,সন্দ্বীপের মুছাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেছেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা কলেজে এবং আমেরিকার ওয়েস্টার্ন কানেকটিকাট স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। বাংলা, ইংরেজি, ফরাসি ছাড়াও অন্যান্য ভাষায় তাঁর ভালো জ্ঞান আছে। ভ্রমণ করেছেন রাশিয়া, ইংল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, সৌদি আরব, ইন্ডিয়াসহ আরো অনেক দেশে। আমেরিকাতে ব্যাংকে চাকরি করেছেন, শিক্ষকতা করেছেন, বর্তমানে সফটওয়্যার টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার টিম লিড হিসেবে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। একজন সৌখিন ইউটিউবার। বর্তমানে নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত “সাপ্তাহিক ঠিকানার ” কলামিস্ট এবং “প্রথম আলো” পত্রিকাতেও নিয়মিত লিখে থাকেন। এবং অনলাইন পোর্টালের নিয়মিত ব্লগার। তাঁর লেখা – ভালোবাসার গল্পগ্রন্থ “মরীচিকা”, ভালোবাসার কবিতাগুচ্ছ “শিশিরবিন্দু” , এবং সমকালীন গল্পগ্রন্থ “কৃষ্ণচূড়ার নীড়” , প্রকাশ করে কারুবাক প্রকাশনী। তাঁর লেখা – উপন্যাস “দিগন্তের আলোয়” ও ভ্রমণগ্রন্থ “আমার দেখা শিকাগো” প্রকাশিত করে শিখা প্রকাশনী । তার সম্পাদনায় যৌথ গল্প সংকলন “নক্ষত্রের জ্যোতি” প্রকাশিত হয়েছে শিখা প্রকাশনী থেকে। এছাড়াও তিনি “ইচ্ছে স্বপ্ন প্রকাশনী” থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা দ্বিতীয় উপন্যাস “রিক্ততার স্বীকারোক্তি” এবং কাব্য গ্রন্থ সংকলন কবিতার জলছবি। লেখালেখি তাঁর একটি শখের জায়গা । প্রবাস জীবনে এই কোলাহলের ভিড়ে লেখালেখির মধ্য দিয়ে এই যাপিত জীবনে প্রাণ খুঁজে পান। লেখালেখি ছাড়াও তিনি একজন উদ্যোক্তা, এবং সোশাল অ্যাক্টিভিস্ট। বর্তমানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন